ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় পৌর কাউন্সিলর মুজিবের বিরুদ্ধে ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে জমি দখল চেষ্ঠা

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::চকরিয়ায় দিনদুপুরে ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে ভীতি ছড়িয়ে এবার ব্যক্তি মালিকানাধীন ভোগদখলীয় জায়গা জবরদখল চেষ্টা অভিযোগ উঠেছে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলোচিত কাউন্সিলর যুবলীগ নেতা মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চকরিয়া পৌর সদরের চিরিঙ্গা বাস স্টেশনপাড়া এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা। ওইসময় ভুক্তভোগী জমি মালিকের বসতঘরে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হামলা ও লুটপাটের এ ঘটনায় ভূক্তভোগী জমি মালিক চিরিঙ্গা বাস স্টেশনপাড়া গ্রামের মৃত নজির আহমদের ছেলে আবুল কাশেম বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে চকরিয়া থানায় কাউন্সিলর মুজিবসহ ৭জনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দিয়েছেন। এজাহারে আরো ৭-৮জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

অবশ্য ক্রয়কৃত জমিতে মার্কেট নির্মাণে চাঁদাদাবির অভিযোগে ঘটনার একইদিন রাতে কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিব বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় একটি পাল্টা অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগটিতে সাতজনকে আসামি করেছেন।

ভূক্তভোগী জমি মালিক আবুল কাশেম থানায় দায়ের করা এজহারে দাবি করেন, চকরিয়া পৌরসভার চিরিংগা মৌজার বিএস ৭১ নম্বর খতিয়ানের ৬৪৬ খতিয়ানের অধীন পৈত্রিক ও খরিদা সত্ত্বসহ তার সর্বমোট ১২.৬৬ শতক জমি রয়েছে। ওই জমিতে দ্বিতল বিশিষ্ট পাকাঘর নির্মাণ করে তিনি স্বপরিবারে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছেন।

বাদী আবুল কাশেম দাবি করেন, এসব জমি নামজারি জমাভাগ খতিয়ান সৃজন পূর্বক প্রতিবছর সরকারি খাজনাও পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু আসামিরা বিভিন্ন সময় লোভে পরে আমার বসতভিটা জবর দখলের চেষ্ঠা করলে আমি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কক্সবাজার এর আদালতে একটি এম আর মামলা (নং-৫৮৫/২০১৯) দায়ের করি।

উল্লেখিত মামলায় বিজ্ঞ আদালত বিরোধীয় জায়গার বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত পূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) চকরিয়াকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিরোধীয় জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।

বাদি আবুল কাশেম অভিযোগ করেছেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাউন্সিলর মুজিবুল হক মুজিবের নেতৃত্বে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ২০-২৫জনের অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত আমার বসতভিটার ওই জমি জবর দখলে হামলা চালায়। ওইসময় আমার ছোটভাই আলাউদ্দিন তাদেরকে বাধা দেয়। এ সময় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা তাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মামলার বাদী জমি মালিক আবুল কাশেম দাবি করেন, ঘটনার এক পর্যায়ে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা নির্মাণাধীণ ভবনের ছাদের উপর উঠে তিনটি পানির টাংকি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার পর নিচতলায় বাড়িতে ঢুকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় চারলাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। এ সময় আমার পরিবার সদস্যদের শোর-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা ৩-৪ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চলে যায়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মুজিবুল হকের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে কয়েক দফায় ফোন করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মুঠোফোনে এসএমএস পাঠানো হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর বিষয়টির আলোকে তিনি নিজের ফেসবুক ফেইজে একটি এ্যার্স্টাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, জমিটি তিনি ২০১১ সালে ক্রয় করেছেন। সেখানে নতুন দালান নির্মাণ করতে গেলে কতিপয় দুর্বৃত্তরা তাঁর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তাদের কথা মতো চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে তার উপরে নেমে আসে অত্যাচার।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাস স্টেশনপাড়া এলাকায় জমি জবর দখল চেষ্ঠার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় জমির মালিক দাবিদার বাস স্টেশনপাড়া এলাকার আবুল কাশেম বাদী হয়ে কাউন্সিলর মুজিবসহ সাতজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

ওসি বলেন, দুইপক্ষের অভিযোগটি দুইটি তদন্তের জন্য থানার একজন এসআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টির আলোকে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: